Facebook Avatar ব্যবহার করা নাকি হারাম কিন্তু কেন এই মতবাদ?


Facebook Avatar

ফেসবুক এভাটার নিঃসন্দেহে ফেসবুকের একটি নান্দনিক ফিচার যা এবারই প্রথম নয় এর পূর্বে বিশ্বের অন্যতম সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট স্নাপচ্যাটের একটি ফিচার ছিলো বিটমোজী। সমীক্ষায় দেখা যায় প্রতিদিন প্রায় ২১০ মিলিয়ন মানুষ তাদের বিটমোজী ব্যবহার করে থাকেন। এই সংখ্যাটা কিন্তু কম নয় সেখানে ফেসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট কেনো এর থেকে পিছিয়ে থাকবে? আরো প্রায় কয়েক মাস আগেই ফেসবুক তার বিটা ভার্সনে এই আপডেট টা দিয়ে দিয়েছিলো পরীক্ষামূলকভাবে পর্যবেক্ষনের জন্য। পর্যবেক্ষণ শেষে গতকাল অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে অফিসিয়ালি Facebook Avatar সবার সামনে নিয়ে আসে। শুধুমাত্র বাংলাদেশে না সারা বিশ্বে যেহেতু স্নাপচ্যাটের থেকেও ফেসবুকের গ্রাহক সংখ্যা বেশি তাই ফেসবুক খুব সহজেই অধিক মানুষের মনে জায়গা করে নিতে পেরেছে এই আপডেটটি দিয়ে যেখানে একজন ব্যবহারকারী ইচ্ছা করলেই তার নিজের পছন্দ মত কাস্টমাইজ করে নিতে পারছেন নিজের এভাটারটি। সাথে থাকছে এক্সট্রা ফিচার হিসাবে কিছু স্টিকার অপশন। 

এবার আসি মুল প্রসঙ্গে.........

ফেসবুকে গতকাল একটি বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় পোস্ট দেখলাম যেখানে সরাসরি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে এটা লিখে যে Avatar শব্দটির শাব্দিক অর্থ অবতার। অর্থাৎ অবতার বলতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবতাকে বুঝায় অর্থাৎ এটা ফেসবুকের একটি বিশেষ ষড়যন্ত্র মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যাওয়া। হ্যা এখানে আমি এই কথাটুকুর সাথে একমত যে ফেসবুকের মুল কাজ হচ্ছে মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যাওয়া এবং মানুষের অধিক সময়কে নষ্ট করে ফেলা। 

কিন্তু একটা কথা কি ভেবে দেখেছেন এই কাজগুলোর সম্পুর্ণ দায়ভার আপনার কারণ কেউ আপনাকে জোড় করেনি ফেসবুক ব্যবহার করতে আবার কেউ আপনাকে জোড় করেনি প্রতিদিন নিজের নান্দনিক ছবি মানুষের সামনে তুলে ধরতে। যদি ধর্মীয় অনূভূতির কথাই আসে তাহলে এটা আপনার কেমন ধর্মীয় অনূভুতি? 

হ্যা ইসলামে বর্নীত আছে ঘরে প্রানীর ছবি রাখা বা সংরক্ষণ করা হারাম। আমি যেহেতু ইসলামিক স্কলার না আমি এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাবো না। লেখাটির শেষে একটি লিংক যুক্ত করে দিচ্ছি সেখানে ছবি  আকা, ছবি তোলা, ভিডিওগ্রাফি করা এসব নিয়ে ইসলামিক মতবাদ কি তা তুলে ধরা আছে। 

আপনি যদি ইসলামিক চিন্তাধারার মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে সঠিক ভাবে ইসলামকে প্রচার করূন যাত্রে করে আপনার দ্বারা একজন মানুষ ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং আপনার কর্মকান্ড দেখে সে নিজেও যাতে নামাজের জন্য প্রস্তুত থাকেন কেননা একজন নামাজী ব্যাক্তিকে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ধৈর্য্যশীল ও বুঝবান করে তুলেন। নেতিবাচক মতামতের মাধ্যমে কখনোই সঠিক মেসেজ দেয়া সম্ভব নয়।

নিজে নামাজ পড়ুন অন্যোকে নামাজে আগ্রহী করে তুলুন পাশাপাশি ফেসবুকে নিজের কর্মকান্ডকে সংযত করুণ নাহলে আপনি যতই এসব নেতিবাচক কথা বলেননা কেনো দিন শেষে আপনি কাউকেই এসব কাজ থেকে আটকাতে পারবেন না। আর কাউকে যদি আটকাতে না পয়ারেন তাহলে আপনার সার্থকতা কোথায়? 

স্নাপচ্যাট ব্যবহার না করার দরূন আপনি জানতেনই না যে বিটমোজি বলে কিছু আছে তাই তখন আর এই বিষয়ে কথা উঠেনি। আর এখানে ফেসবুক নিয়ে কথা উঠেছে তার এভাটার শব্দটি নিয়ে। বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে গেলে দেখা যায় লেখা থাকে Upload Your Avatar সেখানে নিজের প্রোফাইল পিকচার আপলোড করতে হয়। ঠিক তেমন ভাবেই এইখানে এই Avatar শব্দটা একরকম ভাবার্থ বহন করে এখানে কারোই ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানা হয় নাই।

কথা হচ্ছে ফেসবুকে আমরা প্রতিদিন প্রচুর স্টিকার ফিচার ব্যাবহার করে থাকে আপনাদের কাছে সেসব ঠিকই জায়েয আবার কথা হচ্ছে এই এভাটারের তো আরো একটা ভার্সন আপডেট হইছে স্টিকার হিসাবে ঐটা তাহলে কি ?? আবার অনেকেই এমন আছেন তাদের ছবি কেউ যদি একে দেয় খুশিতে তিন লাফ দেয় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আবার তাদের কাছে এই এভাটার নাকি হারাম হয়ে গেছে। ব্যপারটা একটু অদ্ভুত লাগে না ??? 

ফেসবুক এভাটার ফিচারের মুল উদ্দেশ্যই ছিলো জাতি ধর্ম বর্ন নির্বিশেষে মানুষ যে এক সেই মেসেজটা মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া। এখন এটা আপনি ব্যাবহার করবেন কি করবেন না এটা সম্পূর্ণই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এটাকে যদি আপনি হারাম বলেন তাহলে আপনার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে একজন ইসলামিক স্কলারের থাকে কথা বলে আপনার কনফিউশন দূর করুণ। আমি মেনেও যদি নেই এটা হারাম তাহলে ফেসবুকে আপনার বাকি কর্মকান্ডের অনেক কিছুই খারাপ। 

আপনার ঈমান কি এতোটাই দূর্বল যাতে করে আপনার এই সামান্য এভাটার আপনাকে একেবারে নাড়িয়ে দিয়েছে?? একেবারেই না মুমিন ব্যক্তিগণ তর্কে জড়ায় না সুন্দর গঠনমূলক ব্যাক্ষার মাধ্যমে মানুষকে সঠিক ও ভুল বুঝিয়ে দিয়ে থাকে কিন্তু আমি এখন পর্যান্ত এমন কিছু কোথাও পাই নাই । আপনি একজন পজিটিভ ভাইভের মানুষ হলে আপনার প্রচারনাটা এমনও হতে পারত। 

"আসুন আমরা সবাই ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি"


পড়ে আসুন ছবি তোলা ও সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর   (এখানে ক্লিক করূন)

 

- আব্দুল্লাহ আল ফাহিম

 

 

 

 

 

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

Less is More : The way of Minimalistic Lifestyle

একজন মুমিনের জন্য যেসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ

চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে